জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়:
দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে আজ বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে স্থাপিত ২২৪টি বুথে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে এই ভোটগ্রহণ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আয়োজিত এই নির্বাচনে ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে।
নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৮৯৭ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে ভোটারদের ৪০টি ব্যালটে টিক চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে হচ্ছে। ভোটগ্রহণের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে শুরু হবে গণনা, যেখানে বিশেষ ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে ফলাফল নির্ধারণ করা হবে।
সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে ৬৭ জন শিক্ষক পোলিং অফিসার এবং ৬৭ জন কর্মকর্তা সহকারী পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নির্বাচনে মোট ২৫টি পদের বিপরীতে লড়ছেন ১৭৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রার্থী ছাত্রী এবং ৭৫ শতাংশ ছাত্র। যদিও ভিপি (সহসভাপতি) পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই, জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে দুইজন নারী প্রার্থী রয়েছেন। মেয়েদের পাঁচটি হলের ১৫টি পদে কোনো প্রার্থীই নেই, যা নারী অংশগ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বাম, শিবির, ছাত্রদল, স্বতন্ত্রসহ মোট ৮টি প্যানেল।
বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীসমূহ:
- ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী: ভিপি পদে শেখ সাদী হাসান, জিএস পদে তানজিলা হোসেন বৈশাখী।
- বাগাছাসের ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’: নেতৃত্ব দিচ্ছেন আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল ও আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।
- ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’: ভিপি পদে আরিফুল্লাহ আদিব, জিএস পদে মাজহারুল ইসলাম।
- স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন: ভিপি প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু, জিএস প্রার্থী মো. শাকিল আলী।
- সম্প্রীতির ঐক্য: জিএস পদে শরণ এহসান, এজিএস (পুরুষ) পদে নুর এ তামীম স্রোত, এজিএস (নারী) পদে ফারিয়া জামান নিকি। উল্লেখ্য, এই প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা আদালতের আদেশে বাতিল হয়েছে।
- ছাত্র ইউনিয়ন-ছাত্রফ্রন্টের ‘সংশপ্তক পর্ষদ’: জিএস পদে জাহিদুল ইসলাম ঈমন, এজিএস (নারী) পদে সোহাগী সামিয়া জান্নাতুল ফেরদৌস।
নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চার নবযাত্রা শুরু হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীরা আশাবাদী, এই নির্বাচন তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ, অধিকার এবং সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।