বিশেষ প্রতিনিধি গাজীপুর, ৯ আগস্ট:
গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় সন্ত্রাসীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৭) ছিলেন একজন ওষুধ ব্যবসায়ী ও ক্লিনিক মালিক। তবে হত্যাকাণ্ডের পর জানা যায়, তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই বিষয়টি জানতেন না।
নিহত তুহিন ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাটিপাড়া মৌলভীবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গাজীপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করতেন। শুক্রবার (৮ আগস্ট) সরেজমিনে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার সাংবাদিকতার বিষয়টি ছিল পরিবারের জন্য অজানা।
তুহিনের বৃদ্ধ বাবা হাসান জামাল বলেন,
"আমার ছেলে একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করত। ওষুধ ব্যবসাও করত। সাংবাদিকতা করত কি না, জানতাম না। এখন শুনছি সে সাংবাদিকতাও করত।"
তার মা সাহাবিয়া খাতুন বকুলও ছেলের সাংবাদিকতার বিষয়ে অবগত ছিলেন না বলে জানান।
তুহিনের ভাগনে আবু রায়হান বলেন,
"মামা ক্লিনিক ও ওষুধ ব্যবসার পাশাপাশি সাংবাদিকতাও করতেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন। আমরা তার খুনিদের ফাঁসি চাই।"
নিহতের বাল্যবন্ধু মো. আজিজুর রহমান জানান,
"তুহিন প্রায় পাঁচ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি গাজীপুরে স্ত্রী মুক্তা বেগম এবং দুই ছেলে—একজন সাত বছর বয়সী ও অন্যজন তিন বছরের—নিয়ে বসবাস করতেন। পাশাপাশি একটি ক্লিনিক পরিচালনা ও ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। বন্ধুবৎসল মানুষ ছিলেন তুহিন।"
তিনি আরও জানান, ঘটনার আগে তুহিন এক ব্যক্তিকে মারধরের একটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ঘটনার জের ধরেই সন্ত্রাসীরা তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহত তুহিন ছিলেন ছয় ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তিনি ২০০২ সালে স্থানীয় আল হেরা একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০০৪ সালে সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের এম সাইফুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম মিয়া জানান,
"বাদ জুমা গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে গ্রামের বাড়িতে এনে বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।"
এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে এলাকায় শোক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী ও পরিবার দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।