চাঁদপুর প্রতিবেদক :
মাত্র সাড়ে পাঁচ বছর বয়সেই অসাধারণ ফুটবল প্রতিভা দেখিয়ে সবার নজর কাড়েছে চাঁদপুরের ‘খুদে মেসি’ খ্যাত সোহান। এই ফুটবল প্রতিভার মূল্যায়ন করতে এগিয়ে এসেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের পক্ষ থেকে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক সরাসরি সোহানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাকে ফুটবল সরঞ্জাম ও নগদ অর্থ প্রদান করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নের সাড়ে পাঁচআনি গ্রামের সোহানের বাড়িতে উপস্থিত হন আমিনুল হক। সেখানে তিনি সোহানকে উপহার হিসেবে ফুটবল খেলার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং কিছু নগদ অর্থ দেন। একইসঙ্গে ঘোষণা দেন, সোহানের পড়াশোনা ও খেলাধুলার সমস্ত দায়িত্ব ভবিষ্যতে বহন করবেন তারেক রহমান।
ফুটবলের শুরু দাদার দেওয়া বল দিয়ে
সোহান, পুরো নাম মোহাম্মদ সোহান প্রধান, গ্রামের সাধারণ এক পরিবারের সন্তান। তার বাবা মোহাম্মদ সোহেল প্রধান পেশায় একজন কৃষিজীবী। মাত্র আড়াই বছর বয়সে তার প্রয়াত দাদা শাহ আলম প্রধান একটি ফুটবল কিনে দেন সোহানকে। সেই থেকেই শুরু সোহানের ফুটবল যাত্রা। প্রতিদিন বাবার কাছ থেকেই সে নিচ্ছে খেলার প্রাথমিক প্রশিক্ষণ। বয়স মাত্র সাড়ে পাঁচ, অথচ তার ড্রিবলিং, বল কন্ট্রোল ও ফুটওয়ার্ক দেখে অবাক হয়ে যান যেকেউ।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় তার খেলার একটি ভিডিও। সেখান থেকেই নজরে আসে বিএনপির হাইকমান্ডের।
তারেক রহমানের দায়িত্ব গ্রহণ
সোহানের প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নেন তারেক রহমান। তার নির্দেশে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক সরেজমিনে গিয়ে সোহানের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তিনি বলেন,
"তারেক রহমান সোহানের ফুটবল স্কিল দেখে অভিভূত হয়েছেন। সোহানের পড়াশোনা ও খেলাধুলার সম্পূর্ণ দায়িত্ব এখন থেকে তারেক রহমান বহন করবেন। শুধু এককালীন নয়, প্রতি মাসে একটি সম্মানজনক পরিমাণ অর্থও সোহানের পরিবারকে প্রদান করা হবে।"
তিনি আরও জানান, সোহানের পরিবার যাতে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়, সেই লক্ষ্যে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সোহানের পরিবারের প্রতিক্রিয়া
সোহানের বাবা সোহেল প্রধান আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন,
“আমি এই দেশে জন্ম নিয়ে সার্থক। আমার ছেলেকে আজকে যে সম্মান দেওয়া হয়েছে, তা কখনোই ভোলার নয়। তারেক রহমান ও আমিনুল হককে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। সবার সহযোগিতায় আমার ছেলে একদিন দেশের গর্ব হবে।”
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
আমিনুল হক এ সময় জানান, বিএনপি ভবিষ্যতে দেশের সব স্কুলে খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিতে চায়। তিনি বলেন,
"প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচটি ক্রীড়া ইভেন্ট বাধ্যতামূলক করা হবে। এতে করে অলিম্পিক, সাফ কিংবা সাউথ এশিয়া গেমসের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশ ভালো করবে।"
চাঁদপুরের ছোট্ট সোহান এখন শুধু একটি গ্রামের গর্ব নয়, গোটা দেশের সম্ভাবনা। তারেক রহমান ও বিএনপির এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি উদাহরণ হতে পারে—যেখানে রাজনৈতিক দল বা সমাজের বিভিন্ন অংশ একত্রিত হয়ে প্রতিভার পেছনে দাঁড়ায়।
দেশের প্রতিটি কোণায় লুকিয়ে থাকা এমন হাজারো সোহান যদি যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পায়, তবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ফুটবল শুধু এগিয়েই যাবে, গর্বও বাড়াবে।