নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত: অর্থ আত্মসাৎসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ

Khoborbartanews
By -
0

 


নিজস্ব প্রতিবেদক :

মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবদুল মান্নানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর্থিক অনিয়ম, বিদ্যালয় পরিচালনায় ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে রবিবার (৩ আগস্ট) বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাধারণ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ অডিট কমিটির তদন্তে শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—বিদ্যালয়ের অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে নগদে রাখা, অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা আত্মসাৎ, বিধি লঙ্ঘন, এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলা।

এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলেও তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের এতদ্বিষয়ক কমিটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে এবং তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে।”

অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক পদে সাময়িক শূন্যতা তৈরি হওয়ায় সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাগজপত্র ও হিসাব-নিকাশ হস্তান্তরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রধান শিক্ষক রফিকুল আলা অবসরে গেলে সহকারী প্রধান শিক্ষক মুনীর হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। তবে তৎকালীন সভাপতি হুমাউনুর রশিদ মুহিত কোনো কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়াই তাকে বরখাস্ত করে সহকারী শিক্ষক সুবর্ণা জামানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেন। একইদিনে গঠিত নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে শেখ আবদুল মান্নানকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে শেখ আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগপত্র অনুযায়ী, দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দশ মাসে তিনি বিদ্যালয়ের ফান্ডের ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৪৮৩ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে বিভিন্ন ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ জানিয়েছে, তদন্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত শেখ আবদুল মান্নান বরখাস্ত থাকবেন এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী গৃহীত হবে।


Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)