চট্টগ্রাম, ১০ আগস্ট:
চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি, লালদিয়া ও বে টার্মিনালে প্রথম অপারেটর নিয়োগের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন। তিনি বলেন, “আমাদের ইচ্ছে রয়েছে, এ বছরের ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ অন্তত একটি টার্মিনালে অপারেটর নিয়োগ সম্পন্ন করা।”
রোববার (১০ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেট এলাকায় নতুন ‘এজেন্ট ডেস্ক’-এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামানসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চৌধুরী আশিক বলেন, “আমরা এর আগে কখনো আন্তর্জাতিক অপারেটরদের সঙ্গে কাজ করিনি। আরএসজিটির অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারছি—অনেক ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হয়। টেকনিক্যাল এবং ফাইন্যান্সিয়াল স্তরে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা এসেছে। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক অপারেটরদের মধ্যে যারা অভিজ্ঞ, তারা কাঙ্ক্ষিত সেবার মান নিশ্চিত করতে পারবে।”
তিনি আরও বলেন, “তাদের ফাইন্যান্সিং পদ্ধতি — দেশীয় হোক বা আন্তর্জাতিক — সেটি তাদের কাঠামোগত সিদ্ধান্ত। তবে যদি দেশীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হয়, তাহলে দেশের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া নিশ্চিত করা যায়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব।”
সিডিডিএল উদাহরণ স্থাপন করেছে
দেশীয় অপারেটর সিডিডিএল (CDDL) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সিডিডিএল দারুণ কাজ করছে। তারা গত বছর ১.৩ মিলিয়ন টিইইউস হ্যান্ডল করেছে, যা একটি রেকর্ড। রিপোর্ট অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দরের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সক্ষমতা ১.৯ মিলিয়ন টিইইউস পর্যন্ত হতে পারে। সিডিডিএল যদি এই সক্ষমতা অর্জন করতে পারে, তাহলে তা প্রশংসনীয়। তবে আমাদের দেখতে হবে, আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অপারেটরদের মাধ্যমে টেকনোলজি ও গ্লোবাল বেস্ট প্র্যাকটিস আনলে আমরা আরও ভালো করতে পারি কি না।”
তিনি বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য একটাই—জাতীয় স্বার্থ রক্ষা। যারা অভিজ্ঞ, যারা বিশ্বের বিভিন্ন বন্দরে কাজ করেছে, তাদের মডেল বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, কোন পদ্ধতিতে আমরা সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে পারি।”
দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ
বিডার নির্বাহী পরিচালক বলেন, “বাংলাদেশে পাঁচ বছরের প্রকল্প শেষ হতে প্রায়ই ১৫ বছর লেগে যায়। এতে করে গ্লোবাল প্রতিযোগিতায় আমরা পিছিয়ে পড়ি। এখন থেকে আমরা চাই দ্রুত সময়সীমায় প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক। ডিসেম্বরের মধ্যেই বন্দরের বড় প্রকল্পগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতে চাই। কিছু চুক্তি স্বাক্ষর এবং কিছু প্রকল্পে ‘গ্রাউন্ড ব্রেকিং’ শুরু হবে।”
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “নির্বাচনের পর সরকার পরিবর্তন হলেও যেন এই উন্নয়ন চাকা থেমে না যায়, সেজন্য আগেভাগেই দৃশ্যমান অগ্রগতি তৈরি করে যেতে চাই।”