স্টাফ রিপোর্টার :
“মনুষ্যত্ব অর্জন আর পশুত্ব বর্জনই হোক আমাদের অঙ্গীকার”—এ আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে একজন নাগরিক তার গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হলে, সমাজে এক ধরনের অসহিষ্ণুতা জন্ম নেয়। সেই অসহিষ্ণুতা কাটিয়ে মানবিক মানুষ হয়ে ওঠাই আজকের চ্যালেঞ্জ।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘প্রাণী ও প্রাণের মিলন মেলা’-তে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।
তারেক রহমান বলেন, “গণতন্ত্র যেমন মানুষের অধিকার রক্ষা করে, তেমনি একটি নিরাপদ বাস্তুতন্ত্র গড়ে তুলতে হলে পশুপাখি ও বন্যপ্রাণীর অধিকারও সুরক্ষিত রাখতে হবে। রাষ্ট্রে গণতন্ত্র ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠিত থাকলে, বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকে।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ১,৬০০ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে, যার মধ্যে ৩৯০টির মতো প্রজাতি বিলুপ্তির মুখে। বিশেষ করে, দেশের গর্ব রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং হাতি এখন বিপন্ন তালিকায় চলে এসেছে। “৮০’র দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল প্রায় ৫০০, যা এখন কমে প্রায় ১০০-তে দাঁড়িয়েছে। হাতির সংখ্যাও কমে ২০০-এর নিচে নেমে এসেছে।”
তারেক রহমান আরও বলেন, “জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ার পাশাপাশি বন্যপ্রাণী পাচার উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। ফলে শুধু প্রাণীই নয়, তাদের আবাসস্থল, বনাঞ্চল ও জলজ পরিবেশও আজ বিপন্ন।”
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন—“ইনশাআল্লাহ, বিএনপি যদি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পায়, তাহলে প্রাণী কল্যাণ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনগত সংস্কার ও পরিবর্ধন করা হবে।”
তারেক রহমান বলেন, “শুধু আইন করলেই হবে না, আমাদের প্রত্যেক নাগরিকের মধ্যে প্রাণীকল্যাণ নিয়ে সহানুভূতি ও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। কারণ, মানুষ যখন পশুপাখির প্রতি মমতা দেখায়, তখন তা তার নৈতিক উন্নতির প্রতিফলন ঘটায়।”
‘প্রাণ বাঁচাও, প্রাণী বাঁচাও’—এই হোক আমাদের স্লোগান
তিনি প্রাণী ও পরিবেশ রক্ষায় সকলের সম্মিলিত ভূমিকা চেয়ে বলেন, ‘দেশ হোক সব প্রাণের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।’ তারেক রহমান উল্লেখ করেন, রাষ্ট্র যদি মানুষের নিরাপত্তাও দিতে না পারে, তাহলে প্রাণীদের নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলাটা প্রশ্নবিদ্ধ মনে হতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “সব ভালো উদ্যোগ আমাদের চর্চা ও আলোচনার মধ্যে রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান, ক্রিকেটার শফিউল আলম, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনোয়ার হোসেন তুহিন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আকতার, এবং বাংলাদেশ এনিম্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উদ্যোক্তা আতিকুর রহমান রুমনসহ অনেকে।