যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করার পর বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে চার কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী শাহনেওয়াজ কবীর টিপু ‘জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজ’-এর মালিক। তার স্ত্রী আসমা খাতুন অভিযোগ করেন, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে সৈকত হোসেন হিরা নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে টিপুকে কৌশলে আসাদুজ্জামান জনির অফিসে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে জনি তাকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন।
পরিস্থিতির চাপে পড়ে টিপু সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে জনির প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে দুই কোটি টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে পাঠান। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর কিছুদিন পর, ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে টিপুকে ফের অপহরণ করা হয়। চলিশিয়া থেকে বাজারে যাওয়ার পথে হাসপাতাল গেট এলাকায় তার পথরোধ করে সৈকত হোসেন। এরপর বিকেল ৩টা পর্যন্ত তার মোবাইল বন্ধ থাকে।
পরিবার জানতে পারে, টিপুকে নেওয়া হয়েছে কনা ইকো পার্কে। সেখানে গিয়ে আসমা খাতুন দেখতে পান, জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন মিলে ব্যবসায়ী টিপুকে অস্ত্রের মুখে বুক পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালু চাপা দিয়ে আবারও দুই কোটি টাকা দাবি করেন।
পরে বাধ্য হয়ে টিপু তার ম্যানেজারকে ফোন দিয়ে অর্থ পাঠাতে বলেন। পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা আরটিজিএসের মাধ্যমে পাঠানো হয়। একই সময় এক কোটি টাকার একটি চেক, এবং ছয়টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও আদায় করা হয়। হুমকি দেওয়া হয়, বিষয়টি ফাঁস করলে তাকে হত্যা করা হবে।
ঘটনার পর ৩০ জুলাই অভয়নগর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে দাবি করেছেন আসমা খাতুন। পরদিন তিনি স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন দিলেও আসাদুজ্জামান জনি ও মফিজ উদ্দিনের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জনিকে সম্প্রতি তার দল বিএনপি থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভয়নগর থানার ওসি আব্দুল আলিম বলেন, “আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
